Thank you for trying Sticky AMP!!

কোন খাবার কখন খাবেন?

অনেকেরই খাওয়াদাওয়ার নির্দিষ্ট সময়সূচি মানা হয় না। যখন মনে হয়, তখন খেয়ে নেন, একেক দিন একক সময়ে। কখনো একবেলার খাবার বেমালুম বাদ পড়ে যাচ্ছে। এ ধরনের খাদ্যাভ্যাসের নানা মন্দ দিক আছে। সাম্প্রতিক কালে বিজ্ঞানীরা বলছেন, কেবল ‘কী’ খেলাম সেটাই যে সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং ‘কখন’ খেলাম—সেটাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

আমাদের শরীরের হজম, বিপাকক্রিয়া, রুচি, খিদে নিয়ন্ত্রণের কাজে নানা রকমের হরমোন ও রাসায়নিক উপাদান ব্যস্ত থাকে। এসব রাসায়নিক নিঃসরণের একটা ছন্দ আছে, যা দিন-রাতের সময়সূচি মেনে চলে। একই নিয়ম মেনে চলে পরিপাকতন্ত্রের নানা অম্ল বা অ্যাসিড, রাসায়নিক উপাদান এবং এনজাইম বা উৎসেচকগুলোও। বিশৃঙ্খল খাদ্যাভ্যাস এই সুসংহত সুশৃঙ্খল ছন্দকে ব্যাহত করে। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে বিশৃঙ্খল খাদ্যাভ্যাস ওজন বৃদ্ধি, টাইপ-টু ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়। মেটাবলিক সিনড্রোমে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। আবার সময়মতো না খেলেও নির্দিষ্ট সময়ে কিন্তু ঠিকই পাচক রস, অম্ল ইত্যাদি নিঃসৃত হয়ে যায়। ফলে বদহজম হয়, অ্যাসিডিটি হয়। ঠিকঠাক পরিপাক না হলে ভিটামিন-খনিজের অভাব দেখা দিতে পারে।

তাহলে কেমন হতে পারে একটা আদর্শ খাবার সময়সূচি? বিজ্ঞানীরা বলছেন, খাদ্যাভ্যাস অনেকটাই নির্ভর করে সামাজিক আচার-আচরণ, ব্যক্তিগত অভ্যাস ও সংস্কৃতির ওপর। তারপরও কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলা উচিত:

*  সকালের নাশতা দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। কেননা সকালবেলাতেই আমাদের বিপাকক্রিয়া শুরু হয়, হরমোনের মাত্রাও এ সময় বেশি থাকে। সকালের নাশতার আদর্শ সময় শুরু হয় সাতটা থেকে। ভালো হয় যদি নয়টার মধ্যে সেরে ফেলা যায়।

* দুপুরে খাওয়ার সঠিক সময় সাড়ে ১২টা থেকে ১টা। সকাল ও দুপুরের খাবারের মধ্যে একটা হালকা নাশতা নিতে পারেন। সকালের নাশতা মোটামুটি পেট ভরে খেলে দুপুরের খাবারটা মাঝারি পরিমাণের হওয়া উচিত।

* সবচেয়ে ভালো হয় যদি রাতের খাবার সাতটার মধ্যে সেরে ফেলা যায়। বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে, দেরি করে রাতের খাবার গ্রহণের সঙ্গে শরীরের ওজন বৃদ্ধির সম্পর্ক আছে। কোনো কারণে এই সময়ের মধ্যে সম্ভব না হলে অন্তত ঘুমানোর ঘণ্টা তিনেক আগে রাতের খাবার সেরে ফেলুন। এ সময় হালকা খাবারই ভালো।

* ব্যায়াম করার অন্তত ৪৫ মিনিট পর খাবার খাওয়া উচিত।

* প্রতিদিন একই সময়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন। একেক দিন একেক সময়ে খেলে শরীরের রাসায়নিক ছন্দ ব্যাহত হয়।

ডা. তানজিনা হোসেন